প্রকাশিত: ০৪/০৪/২০১৯ ৩:০০ পিএম

নিউজ ডেস্ক ::
মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে সংঘাত এড়িয়ে আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মাতৃভূমিতে ফেরানোর প্রচেষ্টা অব্যহত থাকবে। যেহেতু মিয়ানমার আমাদের নিকট প্রতিবেশী তাই তাদের সঙ্গে সংঘাতে যাবো না। আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ করবো না, যুদ্ধ করতেও চাই না। সবার সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে চাই।’

তবে যেকোনও হুমকি মোকাবিলায় সর্বোচ্চ সামরিক প্রস্তুতি রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (০৪ এপ্রিল) রাজধানীর শের-ই-বাংলা নগরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে সরকার প্রধান বলেন, ‘আলোচনার মাধ্যমে যাতে তাদের নাগরিকদের (রোহিঙ্গা) তারা ফিরিয়ে নিয়ে যায় সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আপনারা সবাই সেভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।’

তিনি বলেন, ‘মানবিক কারণেই আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। মিয়ানমারের সঙ্গে আমরা ঝগড়া বাঁধাতে যাইনি। আমরা আলোচনা করেছি, চুক্তি সম্পন্ন করেছি। তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফেরত পাঠাতে হবে।’

১৯৭১ সালে পাক হানাদারদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের শরণার্থীদের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের নিজেদের অভিজ্ঞতা আছে। ১৯৭১ সালে আমাদের এক কোটি মানুষ শরণার্থী ছিল। কাজেই তাদের নিয়ে এসে পুর্নবাসন করতে হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা আমাদের আছে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “জাতির জনক বলে গিয়েছিন ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয়’। আমরা সেই নীতিতে বিশ্বাস করি। সেই নীতিমালা মেনেই চলছি। সে আদর্শ ধারণ করেই কারো সাথে কোনও সমস্যা থাকলে সেটাও সমাধান করছি আলোচনার মাধ্যমে। আমরা শান্তি চাই, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই। কিন্তু কেউ যদি আমাদের আক্রমণ করে তাহলে তার যেন যথাযথ জবাব আমরা দিতে পারি, আর আমাদের দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব যেন রক্ষা করতে পারি সেই প্রস্তুতিটা সব সময় আমাদের থাকতে হবে। যুদ্ধের জন্য নয় শান্তির জন্য আমাদের প্রস্তুতি দরকার।’

এ সময় তিনি শান্তিপূর্ণভাবে ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা এবং ভারত-মিয়ানমারের সাথে সমুদ্র সীমা সমস্যা সমাধানের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘স্বাধীন দেশে হিসেবে প্রতিটি ক্ষেত্রে যেন বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারি সেই ব্যবস্থা আমাদের থাকা দরকার।’

দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্ষমতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আমরা যেকোনও দুর্যোগ মোকাবিলা করতে পারি। সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। সেটা প্রাকৃতিক বা আর মুনষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ হোক। যেকোনও দুযোর্গ মোকাবিলা করার শক্তি আমাদের আছে।’

ভারপ্রাপ্ত সেনা প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. সামছুল হক, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, প্রতিরক্ষা সচিব আখতার হোসেন ভূইয়াসহ সামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

পাঠকের মতামত